কাঁঠাল

✅ কাঁঠাল সম্পর্কে বিস্তারিতঃ

1. বৈজ্ঞানিক নাম
   Artocarpus heterophyllus — এটি Moraceae (ডুমুর বা পাউরুটি) পরিবারের অন্তর্গত।

2. জাতীয় পরিচিতি
   কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। এটি গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফল এবং দেশের প্রায় সব জেলায় জন্মে।

3. উৎপত্তি ও বিস্তার
   এর উৎপত্তি দক্ষিণ ভারতের পশ্চিমঘাট ও মালয়েশিয়ার বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে। বর্তমানে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যাপকভাবে চাষ হয়।

4. গাছের গঠন
   কাঁঠাল গাছ বড় আকৃতির, দীর্ঘজীবী এবং শক্ত কাঠবিশিষ্ট। উচ্চতা ১০–১৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।

5. ফল ও গঠন
   এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গাছজাত ফল — ওজন ৫৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। ফলের বাইরের অংশ কাঁটাযুক্ত, ভেতরে থাকে রসালো কোয়া ও বিচি।

6. জাতভেদ
   বাংলাদেশে সাধারণত তিন ধরনের কাঁঠাল চাষ হয়:

   • খাজা: শক্ত ও কম রসালো
   • আদারসা: মাঝারি রসালো
   • গালা: নরম ও বেশি রসালো

7. পুষ্টিগুণ
   কাঁঠালে থাকে ভিটামিন A, C, আয়রন, ক্যালসিয়াম, আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি বলবর্ধক ও রোগপ্রতিরোধে সহায়ক।

8. চাষ পদ্ধতি
   বীজ, গুটি কলম, ডাল কলম বা চোখ কলমের মাধ্যমে চারা তৈরি করা হয়। রোপণের সময় গাছের দূরত্ব ১২ মিটার রাখা উচিত। উঁচু ও পানি নিষ্কাশনযোগ্য জমি উপযোগী।

9. রোগ ও প্রতিকার

   • কাঁঠাল পচা রোগ: ছত্রাকজনিত, ফল ঝরে পড়ে
   • মুচিঝরা রোগ: ছোট ফল কালো হয়ে ঝরে যায়
     প্রতিকার: ফলিকুর বা রিডোমিল ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা হয়

10. অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
    কাঁঠাল পাকা অবস্থায় ফল, কাঁচা অবস্থায় সবজি (এঁচোড়) হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিচি ও খোসাও খাদ্য ও পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কাঠ আসবাব তৈরিতে উপযোগী। এটি বাংলার লোকসংস্কৃতিতেও গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।